Posts

Showing posts with the label গুচ্ছ কবিতা

গুচ্ছ কবিতা : বন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়

Image
পোট্রেট শুধু তোমার জন্যই আমি গভীর রাত পর্যন্ত জানলাটা খুলে রাখি। পড়ার অছিলায় বই,বইয়ের আড়ালে মোবাইল।সাইলেন্ট। শুধু তোমার জন্যই পরিশ্রান্ত মা কে মিথ্যে আশ্বাস দিই,বাবাকে বিশ্বাস। একটু স্পর্শের আবদারে ,অলীক স্বপ্নের জাল বুনতে বুনতে তোমার সাইকেলে চড়ে বসি। পেরিয়ে যাই পাহাড়,নদী সমুদ্র।কিছুতেই বলা হয়ে ওঠেনা আমাদের ঘরে রোজ ভাত হয়না। বাবার প্রেসারের ওষুধ টা দুদিন হলো নেই। তবু তিনি সারা দুপুর পরের জমিতে ধান বোনেন। মায়ের পুরনো মেশিন। আধুনিক ডিজাইন আসেনা! এসব জানা সত্বেও জানলার পাশে বসে শুধু তোমারই জন্যে আমি আমি সাক্ষী হীন জোনাকী র মাঠ হই।ওখানে আমাদের স্বপ্ন হারাবার ভয় নেই। ষড়যন্ত্র ছড়িয়ে পড়ছে চক্রান্তের মত মেঘ সে কাহিনী ঘেঁটে ঘেঁটে কালো আরো  যমুনার জল। হীরামন পাখি রে! এমন আচ্ছন্নের চাঁদ মায়াবী জ্যোৎস্নার আলো চেরা শিৎকারে গুটিয়ে তুলছে জাল  তরুণ নিষাদ।পোড়া প্রেম! বয়েস মানো না। বাঁশি তে আজও বিষ। সংসার হারা মেয়ে এখনো বোঝ না।   রাতের আখর আসি বলে চলে যাওয়া আলো পেছন ফেরে না। গাঢ় হয় ছায়া! পাখিদের গায়ে। ঘর কি আপন হয় কারো! ঠিকানা বদলায়। বৃদ্ধ আশ্রম জুড়ে...

বৈশাখী নার্গিসের গুচ্ছ কবিতা : শহরের ডায়েরী

Image
শহরের ডায়েরী  ছেঁড়া পাতা ২৪  একটা অর্ধেক কেটে যাওয়া দিনের পর আমার মনে পড়ে যায় ওষুধের কথা। কোথাও একটা শুনেছি, নিজের দূর্বলতাকে নিজের শক্তি বানাও। আমি বার বার ফিরে আসি চৌকাঠে। আজ দুপুরের পর টিকটিক করে মাথার ওপর শুধু ঘড়ির কাঁটা নাচছে। একটা মৌমাছি হুল ফুটিয়ে দিলে যেমন যন্ত্রণা হয়, ঠিক সেরকম একটা ব্যথা বুকের বাঁ দিকে। মা’কে বললে, এই বলে উঠবে, আরও সব উলটো পালটা জিনিস খাও।  ঠিক মায়ের কথার উলটো দিকে দাঁড়িয়ে আমি একটা সিগারেট ধরাই। আর হাওয়ায় ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দিই যত আছে আদিখ্যেতা, ন্যাকামো গুলো। চাঁদের ঢলতি জওয়ানি দেখে একটা হাসি মাথায় ঘুরে ফেরে।  অপু দূর্গার সেই ট্রেনের হুইশল শুনতে পাই… অথচ কতদিন হয়ে গেল ট্রেন বন্ধ। পাখি উড়ছে, ফড়িং উড়ছে, মাথার কাছে যাবতীয় কথারাও উড়ছে। কিন্তু আমি ঠিক দাঁড়িয়ে আছি। যেভাবে দাঁড়িয়ে থাকার কথা। তার ছিঁড়ে গেলে এরকমই মাথার ওপর পিঁপড়ের দল বাসা বাঁধে। মগজের ভেতর যারা গোলমাল করে বসে। আর ভাবিয়ে তোলে একটা শহরের ভেতর আর একটা শহর কীভাবে দ্বীপ বানিয়ে তুলতে পারে। ভালোবাসলে কি করে হেরে যেতে হয়।  ভাবনার গাড়ি আবার প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে অন্য ট্র্যাকে… কুউ...

অনিন্দ্য সরকারের গুচ্ছ কবিতা : গান ছুঁয়ে ছুঁয়ে

Image
গান ছুঁয়ে ছুঁয়ে           ১.তোমার আনন্দ আমার পর      ‘তাই তোমার আনন্দ আমার পর' এ কথা বলে তুমি থেমে গেলে। সেই থেকে তানপুরার মতো সুর তুলে কেটে যাচ্ছে দিন চাঁদের থেকে ঝরে পড়ছে রাত। এমনকি অমাবস্যার ঘোর অন্ধকারে আমার দুঃখরা সব বেমালুম জোনাকির ভাষ্য শিখে নিল।  আমার মধ্যে যে আমি তাকে তুমি ভালোবাসার আসন পেতে বসিয়ে রেখেছো তোমার পাশে। ২. শূন্য এ বুকে      আমি দুঃখ আড়াল করতে পারি না কষ্টপাথরকে চেপে রেখে ক্ষয়ে ক্ষয়ে নিঃশেষ করতে পারি নি কোনোদিনই..  দীর্ঘশ্বাসে হাহাকার উঠে আসে।  তখনই কে যেন গেয়ে যায় ‘শূন্য এ বুকে পাখি মোর আয় ফিরে আয়' আমি চিৎকার করে কেঁদে উঠি ঠিক যেন নজরুলগীতি।  ৩. আমি অকৃতি অধম      রাত গভীর হলে আমরা ব্যস্ত হয়ে উঠি চাওয়া-পাওয়ার হিসেব করতে বসি পাওয়ার চেয়ে চাওয়ার পাল্লা ভারী হয়ে ওঠে।  হিসেব মিলতে চায় না কিছুতেই।  হঠাৎ জোৎস্নার আলো গায়ে এসে পড়ে শীতল হাওয়া যেন মনকে শান্ত করে দেয় ঠিক তখনই রজনীকান্তের গান মনে পড়ে ‘আমি অকৃতি অধম বলেও তো কিছু কম করে মোরে দাওনি...

মৈনাক দাসের গুচ্ছ কবিতা

Image
  দু'বছর         এতদিনের আলাপ শুকনো বটগাছ প্রেম, আসতে আসতে  পাথর বাটি জমা ছাই— বছর গেছে...  পথ অতিক্রম  আরো কিছু আমার বলা হয়নি  বেশি কথা। দেবীমাহাত্ম্যম্          এই প্রথম জিজ্ঞেস করি জন্ম কী ভাবে হয় ?  কী অপূর্ব জাল  ছিঁড়ে খেয়েছে মশারি  মশাগানে'র সারেগামা মা শেখায়— শিখি , দেখি  শুশ্রূষা মাধ্যাকর্ষণ ছাড়ায়...  দূরে ভেসে আসে  গান নয়, আশা নয়....  চলছে দেবীমাহাত্ম্যম্  হেঁটে যাচ্ছে অবেলা রূঢ়ভাত  যাচ্ছে জিহ্বাকৃত আশীবিষ.... পোস্টার         পাখার আলো, আলোর হাওয়া সব দেখতে দেখতে ছিন্ন হয়ে যাই কিছু বলার থাকে না,  আটকে গেলে বলতে যাই  বলতে গেলে বলা হয় না আর কিছুই...  © মৈনাক দাস অঙ্কন: ঋতুপর্ণা খাটুয়া

অমিত পাটোয়ারীর গুচ্ছ কবিতা

Image
১ ব্যাঘ্রচন্ডী, আইসো সকালে। সুতীব্র অনল পথে...   এখনো বলোনি কেন বৃক্ষদানবেরে, সঙ্গী তাঁরে চাও?  কালোপ্রিয়, শৈশবালোক চির অভিলাষী!  প্রতিমুখ দেখে মেহেরবান, সমঅন্তে বাক্য একই;  ভুল রেখে কেন ফিরে আসো?  আমূল বদলে যাওয়া এ ভূলোক বেড়াহীন রাখি আজ,  তুমিমুগ্ধ প্রাণ এসে খেতে পাক।  তোমার অসুখ নিয়ে তাদের ভ্রমণ বুঝি এইবার চন্দ্রপথ হবে!  আমি হাঁটি। মাটি নেই, বায়ু নেই, জল...  রোদ মেখে যে যুবক আকাশ খুলেছ, চেনা মুখ;  তুমি যে দান করেছ ওরে, অমৃতকণা—  কৃতজ্ঞ আমি, তোমার দেবতারে নিজমাংসে ভোগ দিতে চাই।   ২ পথ নেই আর কোনও, ফিরে যাওয়া...    তোমারে না লেখা দিন পৃথিবীতে কেমন ঘনাবে, সে কথা  আশ্চর্য ধবল ফড়িং! জন্মসময় নুলো; জন্মের কবজি থেকে একটি কাটা হাত ঝুলে আছে                                   ... আঙুল চ্ছিন্ন হওয়া অন্য হাত আগের ঔরস আমার, ইতিপূর্ব ঈশ্বর—  এ সমস্ত ফেলে রেখে শিশুসঙ্গ, রমণীপথ তবু!  যে দ্রোণ শীতল, সে কন্...

অরিত্র দ্বিবেদীর গুচ্ছ কবিতা : ১৩ পার্বণ

Image
১৩ পার্বণ ১ ভালো আছো? উত্তরের অপেক্ষা করিনি। ২ খুঁটে খাব, জীবন! আমি তো পাখি নই। ৩ কালবৈশাখী কাঁপছিল দূরে  আমার হাতে ধরা ছিল কিছু আশুত পাতা। ৪ কাল ঘুমিয়েছ একমনে। তবে, স্বপ্নে কেঁপে কেঁপে উঠছিলে কেন? ৫ উদাসী হাওয়ার বিকেল। স্টেশনে একটাও লোক ছিলনা। ৬ শুকিয়ে গেছে, কাঁটার খোঁচা, বুকের দাগ "ডিপ্রেশনের বাংলা জানি, নিম্নচাপ!" ৭ তোমার কেনা বইয়ে মুখ ডোবালাম তুমি লাইব্রেরির দিকে উঠে চলে গেলে। ৮ জঙ্গলের মাঝে থমকে দাঁড়ালে; 'হ্যাঁ, আমিই ডেকেছি তোমায়'। ৯ খাটে কয়েকটা শব্দ ছড়িয়ে আছে। খাতায় লেখা শব্দদের দলে তোমার মুখটা হারিয়েছি। ১০ লেখা কবিতার ওপর শকুন এসে বসল। কবি একটা দীর্ঘশ্বাসে ellipsis বসালো। ১১ মানুষ চেনার বদ অভ্যাস আমার নেই, জানো? শুধু অ্যান্ডি ওয়ারহোলের ছবিতে তোমার একটা মুখ দেখেছি। ১২ কথার পিঠে কথা নয় অপেক্ষা লেগে থাকে। ১৩ মানুষ থেকে ছিটকে এসে আমি আর বাস্তবতা মুখোমুখি বসি। হাতে ধরে ওকে ভাবতে শেখাই। আমার কাঁধে মাথা রেখে, কান্নায় ভেঙে পড়ে ও। © অরিত্র দ্বিবেদী অঙ্কন : ঋতুপর্ণা খাটুয়া                  ...

মহিউদ্দিন সাইফের গুচ্ছ কবিতা

Image
বঙ্গভাষা সংবাদ জাড়ের সন্ধ্যায় আগুন তাপার কালে জঙি বাউরির কাছে একদা বঙ্গলিপির কথা, শুনেছিলাম। অবাক্যি কালিহাঞ্জি সাঁঝ কাঁজি-আলোতে শুধু দেখা যাচ্ছে তাঁর মুখ বৃহদ্ধর্মবর্ণিত সেই গূঢ় নাক ও চোখ একটি আবহমণ্ডলকে রচনা করছে। লিপিকালের বঙ্গভাষায় একটি পদের ধূয়া তুললেন তিনি, বোঝালেন এ কদাপি অর্ধম্লেচ্ছ চর্যাগীতি নয় এর সাথে মিল আছে বায়ুরুৎম, পুষ্করশারী ও মহোরগ ভাষার কিছুকিছু এবং প্রাচীন পাখুড়ির লাহান ধ্বনি দিয়ে তিনি একটি ভাবকেও জাগালেন এভাবে মধ্যবর্তী বায়ুস্তর গাঢ় হয়ে একটি নীলাভতম দুনিয়া পয়দা হল মাঝের মান্দার আগুনকে চকিতে মনে হল জন্মপলের মিহির আর আমরা নীহারিকাপুঞ্জের মাঝে বসে আছি তবুও আমার গুমান আর যায় না কিছুতে বিভিন্ন অপূর্ণ বাক্যে তাঁর কাছে ভেদ জানতে চাইলাম বিবিধ কূটধ্বনি যা স্মরণে এল ব্যবহৃত হল একে একে অগত্যা, কথাপ্রসঙ্গে তিনি লাল্হ দেশ ও মহাস্থবির কালিকের কথা শোনালেন, একিন এল, তিনি সত্যই বঙ্গভাষায় কথা বলিতেছেন… --------------------- ধ্যান ভেঙে তোমার থেকে সরে ভাবি 'সাফাইরা'র ধ্যানে ডুবে যাব, তুমিও আচকা ব্যথা, অনহা সুফি থেকে বাউন-বালিকা হবে ফের, আর পায়ের নেউর রইবে পড়ে, প্রার্...

আত্রেয়ী চক্রবর্তীর গুচ্ছ কবিতা

Image
গর্ভশোক    সে বিষাদকণাকে চাইনি আমরা বেলা বাড়লে বলেছি, 'ভেসে যাও' — তার হাতে দিইনি রাঙাযোগ, মা-বাবার স্নেহঋণ বরং প্রপঞ্চ-প্রপঞ্চ ডাকে কলহে মেতেছি দুইবেলা যেটুকু চলে যাওয়ায় কাঁদতে নেই, তাতে  কে যাবে ভেসে? আধফোটা পক্ষীশাবক, নহলি আঙুল ভবিষ্যজন্মশাখা; আর কে কে যায়?  ভিটেমাটি, শিকড়, জরায়ুনদীটি যার নাম এ নিঃস্ব দেহে একত্রে থাকার কথা জানি জানি, পিতাশব্দ শিউরে ওঠে — শিউরে ওঠে ঝলসানো বালিহাঁস আঁতুরসুগন্ধি, ঘ্রাণ… রঘুবংশ  অশ্বত্থ পেরচ্ছে ট্রেন, ধানের গোলা, অন্ন-বস্ত্র-কুলদেবতা জানালার পাশে কে ও বিরহী কান্তা  মেটেসিঁদুর গোধূলি তনয়া! সকালের হকার ডাক দেয় সোহাগ-সোহাগ দ্বিতীয়টি নগরমৃণাল, দেহজ বিজ্ঞাপনে আমি ঘরপোড়া ভিখারি — চোখ চলে যায় সিঁথির ভাঁজে স্থিরচিত্র, নিজেকে যাচি বেপাড়ার যুবক, তুমি উঁকি দিয়ে যাও বুকের ভিতর জেগে ওঠে নীলচে স্তন, আমিষস্পর্শ আমি স্নান সেরে নিই এই ফাঁকে; দেখি জল ঠেলে ডাক দিচ্ছ — "এসো মেয়ে, দু'কদম অসভ্যতা শেখাই!" শুভদৃষ্টি  প্রাচীন পাড়াটির গা ঘেঁষে দাঁড়াই — একচালা ঘর, নেভানো আলো পৌষের শীত এসে জড়াচ্ছে গায়ে, জড়িয়ে নিই রুহানি চাদর ব্যথাতুর শ...

শুভদীপ রায়ের গুচ্ছ কবিতা

Image
চিরায়ত   প্রতি নিঃশ্বাসে বিক্ষত করে, চিরুনি তল্লাশি থামিয়ে, যদি মেঝেভর্তি আঁকিবুঁকি স্পষ্ট করার চেষ্টা কর, তবে জেনে রাখো এই মুহূর্তে আমি বিদ্রোহ জানালাম। তোমার সব গন্ধ-বর্ণ-ছন্দ সবটুকু ভুলে যাওয়ার আগে আমাদের শেষবার দেখা হওয়া জরুরি ছিল; কিন্তু এই পার্থিব বীতরাগ আমি ঘৃণা করি আর ঘৃণা করি তোমার চুলের আড়াল পেরিয়ে- তোমার ঠোঁটের কাছে  পৌঁছানোর পথে সব বহুব্রীহি অনুজ্ঞা। তবু এসব নিরর্থক দৈন্য আমি বয়ে চলি রোজ, আর অবজ্ঞাপ্রতি একটি গোলাপচারা পুঁতে যাই পৃথিবীর বুকে, যাতে, তারা গোনার অছিলায় তোমার সন্ততিদের আমার স্পর্শটুকু স্বীকার করতে হয় প্রতিক্ষণ। শৃঙ্গার চোখে চোখ, আঙুলে আঙুল- শব্দময় পৃথিবীর দূরতম বাতিঘরে আলো নিভে এলে, ভালোবাসা নেমে আসে সমুদ্রের বুকে। যেটুকু আড়াল করে দিশাহীন স্বপ্নেরা মুড়ে ফেলে গোটা মহাকাশ, তার পাশে দেশকাল থমকে দাঁড়ায়; এলো চুলে এলোমেলো ভাবনারা লুকোবার ছলে ইশারায় ডেকে নেয় পূর্বকল্প শেষে, উপোসী বাঁশির শব্দে শ্রীমতীর মতো তারা ভুলে যায় শরীরী খেয়াল- সবটা গুলিয়ে গেলে আরেকটু আড়ালে, মুছে যায় পিছুটান যত… নৌকাবিহারে শুধু  নিষিদ্ধ চাঁদ আর চোখে চোখ...

প্রাচীন প্রবাদ -২ : আকাশ গঙ্গোপাধ্যায়

Image
প্রাচীন প্রবাদ -২  ১ এখনই সঙ্গম ছেড়ে উঠে যাচ্ছি যেহেতু কবিতা আদপে পিচ্ছিল খুব, ভুল খাতে গড়িয়ে না দিয়ে পাতায় তুলব ভাবি তুলে রাখব ক্ষোভের বালিশে ব্যক্তিগত অন্ধকার বারোয়ারি মঞ্চে উঠে, পড়ে যতখানি আলো পাব, সঙ্গম সে তৃপ্তি দেবে না ২ দুপুর উলঙ্গ ডালে ঝুলে আছে লাজুক মাদুলি মেয়েটি পোশাক খুলতে দ্বিধা করে কাছে ডাকি, বলি শব্দ সমুদ্র আঁকে যদি তাতে রক্ত দেন কবি সমুদ্র রক্তিম হয়, বীর্য হয় নীলাভ বাদামি তোমাকে শেখাতে পারি  এসমস্ত জাদুবিদ্যা, ছল শর্ত? কেবলই জেনো, দুজনের পদ্যজাত ঢেউ তোমাকে মাতৃত্ব দেব, অমরত্ব কেড়ে নেব আমি ৩ মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে  হাফ মাত্রা, অথচ নাহলে লেখাতে তেমন কোনও যৌনতা থাকবে না যাকে কল্পনায় তুলে এনে ছেলেটি স্নানের ঘরে আজ জানলা বন্ধ রেখে জল ঢালবে শুকনো নালিতে মেয়েটি জানতে পেরে  প্রেমিকের গোপন চিঠিতে আয়নায় উজ্জ্বল হবে  মায়ের স্নেহের ডাকে দেরি হবে উত্তর দিতে ৪ যেহেতু সঙ্গম থেকে উঠে এসে তাকেই লিখেছি যুক্তি সাজালে আমি অপরাধী কেননা বাজারে, কবিতা ছেড়েছি ভেবে  নিজেদের শয্যাদৃশ্য লিখে পাঠককে দিয়েছি, তাতে ঘটা করে প্রথম পাতায় নিজের নামের পাশে দিনক্ষণ জান...

শিরোনামহীন চারটি কবিতা: অণুষ্কা আচার্য্য

Image
শিরোনামহীন চারটি কবিতা  এক এক অপার্থিব ঔজ্জ্বল্যের নীচে বসে আছি, আলোতে ভেসে যাচ্ছে আমার হৃদয়; নাকি পুনরুত্থিত বাসনার তোড়ে? দুই এই মাত্র কাটা খেলো একটা ঘুড়ি। আসলে তো ঘুড়ি নয়,আমার যাবতীয় প্রত্যাশা। এখন তাদের আর খুঁজে পাওয়া যাবে না আলাদা করে কোথাও, এক্ষুনি মিশে গেল জীবনের সাথে তিন জীবন বয়ে নিয়ে চলে জীবনকে, হৃদয় বয়ে নিয়ে চলে আপনাকে আর আমি বয়ে নিয়ে চলি পাপবোধ। আমার এইটুকু আছে। চার এসবই আপনাকে দেবো। মৃত্যুচেতনা আমায় সংযমী করে, আমি দীর্ঘকাল বসে থাকতে পারিনা। আপনি আমায় স্থবিরতা দেবেন?  © অণুষ্কা আচার্য্য অঙ্কন:  শাশ্বত বন্দ্যোপাধ্যায় 

অয়ন সিকদারের গুচ্ছ কবিতা

Image
মণিহারা শিকলে নিজের ঠোঁট; আগুনে সাতটি পাক জ্বলে দালানে ধানের খই। আঁচলে মায়ের মত খাঁটি গর্ভে বন্ধ্যা হওয়া একফোঁটা কবিতা আমার, যদি সে কাঁদেও, যেন জলের শূন্য হয়ে উঠি… উঠোনে পুড়ছে মুখ। শাড়িতে পাড়ের রঙ গলে যেভাবে জ্বরের তাপ, ওর কোলে ভিজে ফেলে ঠাঁই যেন সে একটিবার আমাকে ফিরিয়ে দিতে পারে সিঁথিতে আবির রেখে ধূপগন্ধে ভাঙন শোনাই সকালে ধ্রুপদ হওয়া প্রতিটা লক্ষ্মীর পাঁচালি আহারে বাতাসাভোগ, পায়েসে স্পর্শ করা পাখি শাঁখাতে সুরের তালে যে-কটা পালক ছিঁড়ে আসে তোমাকে সন্ধে ভেবে যেন 'অনামিকা' বলে ডাকি দু'হাতে বধূর ধুলো; প্রসাদে প্রেমের রঙ লাগে আঙুলে কান্না নেই, হৃদয়ও মোমের মত পোড়ে জানালা বাবার মাটি, ঘৃণাতে লাঙল মিশিয়ে তোমাকে খুঁড়লে আরো বাংলা ভাষার ছাই ওড়ে … ২ প্রাক্তন মৃত্যুমুখ ছেড়ে উঠে আসে আনুষঙ্গিক অব্যয়… দিতে দিতে নিজেকে ক্ষিপ্ত করেছি! অথচ অপমানস্পৃহা  আমাকে প্রেত ভেবে ছুঁড়ে দেয়— এত অত্যাচার! তুমি চাইছ আরেকটু হোক এ পাশা সৈন্যজয়ী। কেন প্রশ্ন করলে না? রানিরা বিষের স্মারক  অথচ স্বাভাবিক। বুকনি ছিতড়ে আসে হাতে আর পায়ে উৎসর্গে তুমি-নাম, যেন কেউ বোঝে না… নতুন বন্ধু এ...

মুন্নী সেনের গুচ্ছ কবিতা : সম্বোধন

Image
সম্বোধন  ১ কবিতা লিখি না আর কবিতা- ইদানীং যেন বালির ঘর লিখতে চাইলেই ভেঙে পড়বে ঝুরঝুর করে তবুও  কোনো কোনো রাতে জল বাড়ে নিঃশব্দে  হঠাৎ কেউ আপনি থেকে নেমে আসে তুমিতে  আর পৃথিবী ভেঙে পড়ে ঝুরঝুর করে আধখাওয়া ভাতের থালার মত  আমাদের অসমাপ্ত কথা পড়ে থাকে- একা- তুমি সুখী আমি সুখী  আমাদের কথাবার্তা টানটান জামা গোঁজা ফুলবাবু নিচের দিকে বোতাম নেই  ঢেকে রাখি  যেমন করে কেউ কেউ  আধখাওয়া ভাতের থালা ঢেকে রাখে সযত্নে  প্রেম মাছির মত ঘুরে ঘুরে ঘুরে ঘুরে  ফিরে যায়... ২ কবিতা লিখি না আর  সোজা কথা সোজাভাবে বলার সাহস চলে যাচ্ছে  এখন শুধু হাহা হিহি আর মাঝে মাঝে ফেরার পথে মাংস কিনে ঘরে ফেরা  মাইরি বলছি, কবিতা লেখার থেকে ঢের ভালো  চোখে পোকা ঢুকে যাওয়ার মত কারো কারো সম্বোধন বিঁধে থাকে সারারাত জেগে  কথা বলতে বলতে ভাত ঠাণ্ডা হয়ে আসে  কথা বলা মানে কবিতা লেখা  যাদের কবিতাকে ডালভাতের ঝক্কি পোহাতে হয় না  আমি চাই তাদের লেখার পাশে মোমবাতির নীরবতা যেটা বলতে চাইছি, কারো কারো সম্বোধন শিউলি ফুলের থেকেও নরম সকাল...