Posts

Showing posts from June, 2023

ভালো থেকো নিশীথ অবশেষ —পর্ব ১২ : জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়

Image
ভালো থেকো নিশীথ অবশেষ: পর্ব ১২ - কী ব্যাপার, ফোন তুলছিলে না কেন? - আরে চোখ লেগে গেছিল... বুঝতে পারিনি। - চোখ লেগে গেছিল মানে? তোমেক কি এমনি এমনি পাঠালাম ওখানে? - - যাক গে! এখন কী সিন বলো। - খুব একটা ভালো মনে হচ্ছে না। - মানে? - মানে, একটু আগে কথা কাটাকাটি হচ্ছিল... একটা মেয়ে একা বেরিয়ে যাচ্ছিল নার্সিং হোম থেকে। - কে বেরিয়ে যেতে চাইছিল? কী বলছ ঠিক করে বলো! - আরে অন্য মেয়েটা, রোগা মত যেটা। - যে অজ্ঞান হয়ে গেছিল তার কী অবস্থা? - বুঝতে পারছি না ঠিক, এখনো তো ভেতরেই আছে। - মানে? তুমি ভেতরে থাকছ না? - গেছিলাম তো বার দুয়েক, তোমাকে তো জানালাম তখন। - তাহলে? থাকতে দিচ্ছে না নাকি? - না... ডাক্তারই বেশি লোক ঘরে থাকতে দিচ্ছে না। - ঘরের ভেতর থাকতে হবে না, নার্সিংহোমের ভেতরে থাকো। চোখে চোখে রাখো... এত করে বলে দিলাম, এত বার বুঝিয়ে দিলাম... কী যে করছ গিয়ে! এর চেয়ে আমি নিজে গেলেই ভালো হত। ধোর! - আমি যাচ্ছি এখন একবার। জানাচ্ছি তোমাকে। - দয়া করে ওদের সামনে ফোন করো না। - আচ্ছা - আর শোনো... - কী? - কতটা সিরিয়াস কেস জানিও। অন্য গেস্টরা আছে। চাপ হয়ে যাবে সকালে ব্যাপারটা অন্য দিকে গেলে। - ঘাপলা তো

চকোলেট কথা : সোহম ভট্টাচার্য্য

Image
চকোলেট কথা   অতীতের চকোলেটের সঙ্গে আজকের দিনের চকোলেটের মিল খুবই কম । ইতিহাস জানান দেয়, অতীতে চকোলেট কোন মিষ্টি ও ভক্ষণযোগ্য নয়, বরং ছিল তিতা স্বাদের উৎসবের পানীয় । প্রাচীন মায়া সভ্যতায় যুগেও ছিল চকোলেট এর অস্তিত্ব । এমনকি তারও আগে, দক্ষিণ পূর্ব মেক্সিকোর প্রাচীন ওলমেক সভ্যতায় এর প্রচলন ছিল বলে খাদ্য ইতিহাস বিশেষজ্ঞদের মত । ‘চকোলেট’ শব্দটা শুনলেই মিষ্টি, ক্যান্ডি, বার ও মনোরম মিষ্টান্নের ছবি চোখে ভেসে ওঠে । তবে সুদূর অতীতের চকোলেটর সঙ্গে আজকের কোনও মিলই নেই । ইতিহাস জানান দেয়, কোকো নামের গাছের গুটি গুটি ফলগুলোর এক একটিতে প্রায় চল্লিশটির মত ‘বিন’ বা ‘শুঁটি’ থাকে যেগুলো পুড়িয়ে কোকো বিন তৈরি হতো।  যুক্তরাষ্ট্রের স্মিথসোনিয়ার ন্যাশনাল মিউজিয়াম এর কালচারাল আর্ট কিউরেটর হায়েস লাভিস জানান, খ্রীষ্টপূর্ব ১৫০০ থেকেই প্রাচীন ওলমেক সভ্যতার মানুষেরা নৌ যান ভরে কোকো ফল নিয়ে আসতেন ।  ধারণা করা হয়, ওলমেকরা, তাঁদের ধর্মীয় উৎসবে কোকো বিনগুলি সাজিয়ে রাখতেন দেবতার প্রতীক বা (totem) এর সামনে । মায়া সভ্যতায় ওলমেকরাই সম্ভবত এই কোকোর ব্যবহারকে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন ।  মায়ার ইতিহাসে উল্লেখ পা

সহেলী সেনগুপ্তের অণুগদ্য গুচ্ছ

Image
একে তো ফাগুন মাস, দারুণ সময়... ফেব্রুয়ারি হাওয়ায় মনটা বসন্তবৌরি হয়ে যায় কেমন ঝুপুস করে। খোলামকুচির মতন, শিমুলতুলোর মতন, পায়রার পালকের মতন হাল্কা হয়ে গিয়ে দমকা হাওয়ায় উড়তে থাকে বেমক্কা। লাগাম পরে না কিছুতেই। কাজ করে না কিচ্ছুটি। অদৃশ্য খোঁপায় কল্কে ফুল গোঁজে। আলো-আঁধারি গলিতে উপুড় করে ঢালে মুঠোরোদ্দুর। আকাশনীল, আর শ্যাওলা সবুজ, আর মেঠো মেটে রংসাজের কবিতার নতুন বইয়েদের ওমে মুড়ে রাখে নিজেকে। গত শীতে যে তাকে ভেঙে ফেলেছিল, দুমড়ে ফেলেছিল, উপড়ে ফেলেছিল প্রায়, তাকে একফালি নতুন শিকড় ধার দিয়ে আসে হাসতে হাসতে। তার অরণ্যপ্রাণে যে শুধু কুঠার বিছিয়ে দিয়ে গেছে, তাকে নিঃশেষে ক্ষমা করে দেয়। ঈশান কোণ থেকে ধেয়ে আসা নিম্বাসমেঘের মত ওজনদার আঘাত তার পথে বিছিয়ে দিয়েছে যারা, তাদের মনে করিয়ে দেয় যীশুর ডাকনাম। পঙ্কিল জলে দাঁড়িয়ে যারা কাদা ছোঁড়ে ক্রমাগত, তাদের অনতিদূরে রেখে যায় ভোরের বেলার ফুল। আয়ুরেখা ধরে হাঁটতে থাকা যে বিগতযৌবন, ক্লান্ত রাজপুত্র তার অভিশাপসমান অমরত্বের বর ফিরিয়ে নেওয়ার প্রার্থনা করে রোজ ঈশ্বরের কাছে, তার বলিরেখায় ভরা বিষণ্ণ হাতে দেয় কোনো এক দুঃখী রাজকন্যার কবরের উপর ফুটে থাকা বেগনি