Posts

Showing posts with the label উপন্যাস

ভালো থেকো নিশীথ অবশেষ : পর্ব ১৬— জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়

Image
ভালো থেকো নিশীথ অবশেষ : পর্ব ১৬ 'এখন, এই সময়ে ওখানে যাবে?' মৈনাক এক রকম অবিশ্বাস এবং বিরক্তি থেকেই কথাগুলো বলে ফেলল। আসলেই একপ্রকার ঝামেলা, অবাঞ্ছিত ঝামেলা ছাড়া আর কিচ্ছু মনে হচ্ছে না এখন আর। জমিদারবাড়ির ওই ঘরটায় কেউ যায় না। কী করে কেউ চাবি জোগাড় করেছে, কেন ওই ঘরে ছিল-- সেই নিয়েই কথা কাটাকাটি হচ্ছিল ম্যানেজারের সঙ্গে। ও নিজে শুনেছে। দুপক্ষের কেউ কিছু প্রমাণ করতে পারল না, অথবা 'এক হাতে তালি বাজে না'... তাই ওরা অফেন্সিভ কিছু করতে পারেনি। দায়টা ওদেরই, যাদের ক্ষতি হয়েছে তারা অতিথি। ওই ঘরে কেন গেছিল, ওই ঘরে কাউকে থাকতে দেওয়া হয় না-- এসব বলে নিজেদের ডিফেন্ড করতে পারবে না। বরং ওতে জটিলতা বাড়বে, প্রশ্ন আর কৌতূহল বাড়বে। কিন্তু কিছু একটা কারণে, সত্যিই রেসর্টের কর্মীরা ওই ঘরটা এড়িয়ে যায়। কারণটা এখন আর ভেঙে বলবে না, কিন্তু এড়িয়ে যায়... এবং এড়িয়ে যাওয়ার কারণটা যে খুব একটা স্বস্তির নয়-- এটা অব্যক্ত থাকলেও আন্দাজ করা যায়। মেয়েদের বলে দেওয়া হয়েছিল, সাবধানে রাতটা কাটিয়ে দিতে। সবাই একটা ঘরে আছে, কেউ বেরোয়নি। 'আর এই মেয়েটা একা যা খুশি করছে... কাউকে পাত্তাই দিচ্ছে না!' ...

ভালো থেকো নিশীথ অবশেষ : পর্ব ১৫ — জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়

Image
ভালো থেকো নিশীথ অবশেষ : পর্ব ১৫ যেখানে প্রশাসন, পুলিশ, রাজনৈতিক নেতা আর সমাজবিরোধীরা মিলেমিশে ঝালমুড়ির মত এক ঠোঙায় থাকে... সেখানে  আলাদা করে অপরাধ আর অপরাধীকে শনাক্ত করার ব্যাপারটাই খুব গোলমেলে হয়ে যায়। এই নিয়ে কোনো পলিটিকালি কারেক্ট স্ট্যান্ড নেওয়ার মানেই হয় না। আজকাল তো আর কিছু রাখঢাক নেই। লাইভ ক্যামেরার সামনেই বুক চিতিয়ে যা করার করে যায় লোকজন। প্রজন্মের পর প্রজন্ম অপরাধ করেও কারো বিরুদ্ধে কোনো এফআইআর অবধি হয়নি। কেউ ঠাকুর, কেউ ব্রাহ্মণ, কেউ মাহান্ত, কেউ জেলা প্রশাসক... একটা লাইসেন্স আছে এদের নিজের ইচ্ছে মত চলার। এবং আইনকে কাঁচকলা দেখিয়েই জীবন কাটিয়ে দেওয়ার। আগেও হত, এখন প্রকাশ্যে সমর্থন এবং বাহবাও জুটে যায়। বাস্তব থেকে সিনেমায় ওয়েব-সিরিজে উঠে এসে, অপরাধ আর অপরাধীরা মনোরঞ্জনের মালমশলা হয়ে গেছে। তাদের ভাষা আর কাজ-কর্ম দেখে হাসছে শহরের দর্শক। কানে বন্দুক ঠেকিয়ে কারো প্যান্ট ভিজিয়ে দেওয়া দেখে হাসি পাচ্ছে। থার্ড ডিগ্রি দেওয়া দেখে হাসি পাচ্ছে। ভুল সময়ে ভুল জায়গায় এসে পড়ে মার খাওয়া বা মরে যাওয়া দেখে হাসি পাচ্ছে। সবার ওপরে ক্ষমতাশালী পরিবারদের দাপট উজ্জ্বল হয়ে উঠছে চোখ-মুখ। ক...

ভালো থেকো নিশীথ অবশেষ : পর্ব ১৪ — জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়

Image
ভালো থেকো নিশীথ অবশেষ : পর্ব ১৪ জমিদার বাড়ির এই অংশটি একটু অন্যরকম, অন্য দিকের অংশের থেকে চার-পাঁচ ধাপ সিঁড়ি বেয়ে নীচে নেমে আসতে হয়। একসময়ে নাকি গুমঘর ছিল। অথচ এখন রেনোভেট করে অন্যরকম করে দিয়েছে। দিনের বেলা এলেও একটা রহস্যের গন্ধ পাওয়া যায়, ঘরের দেওয়ালগুলো কেমন ঠান্ডা। এরা ইচ্ছে করেই অল্প পাওয়ারের আলো রেখেছে ঘরের এক একটি দেওয়ালে। ঘরটা এখন বদলে গিয়ে রিক্রিয়েশন রুমের মত করা হয়েছে। একদিকে ছোটো ফ্রিজে ঠান্ডা পাণীয় আর নানা রকম বিয়ার, তালা বন্ধ থাকে। সার্ভিসে থাকা স্টাফদের বললে অর্ডার মত আনিয়ে দেয়। আর একদিকে বসে থাকার মত কাউচ, বেতের চেয়ার, ছোটো টেবিল। বইয়ের তাকে পাতলা পাতলা কিছু বই। দুটো কাঠের দাবা খেলার টেবিল-বোর্ড, যেখানে চা-কফির কাপও রাখা যায়। কার্ড গেম খেলারও ব্যবস্থা আছে। অল্পসংখ্যক কিছু জনের এক বিচ্ছিন্ন রিক্রিয়েশন রুমের মত, কিংবা coquette's lounge। কিন্তু নো-স্মোকিং জোন। এসির মাধ্যমে ঘরের তপ্ত বাতাস বাইরে বার করে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আসলে ঘরটায় ঢোকার একটাই দরজা, কোনো জানলা নেই। অন্য কোনো দরজাও নেই। ঘরের  ছাদটাও তুলনায় একটু খাটো।        অতিথিদে...

ভালো থেকো নিশীথ অবশেষ — পর্ব ১৩ : জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়

Image
ভালো থেকো নিশীথ অবশেষ -- পর্ব ১৩     'আরে দেখ কে!... কেয়ারফুল ইয়ার!' গ্লাসটা পড়ে ভেঙে যেতে, আর কাচগুলো সশব্দে টুকরো টুকরো হয়ে ছড়িয়ে যেতে যতটা সময় নিল, তারই মাঝে প্রতিক্রিয়াবসতঃ চেঁচিয়ে উঠে পড়ল প্রাজক্তা। আড়ষ্ট হয়ে একজায়গায় দাঁড়িয়ে তখন অন্তরা, ওর হাতে জলের জাগটা কাঁপছে। পায়ের কাছে ছিটকে এসেছে ভাঙা কাচের টুকরো। 'ওখানেই দাঁড়িয়ে থাক, নড়লেই পায়ে কাচ ফুটে যাবে!', কথাগুলো বলতে বলতে খাট থেকে নেমে এগিয়ে এসে ওর হাত থেকে জলের জাগটা নিয়ে নিল ব্রততী। তারপর অন্তরার একটা হাত ধরে আসতে আসতে দু-পা পেছন দিকে নিয়ে এলো, খাটের দিকে। ভালো করে তাকিয়ে দেখল ঘরের কোথাও কাচ পড়ে আছে কি না। 'যা তুই খাটে গিয়ে বস, কিচ্ছু হয়নি। এত চাপ নেওয়ার মত কিচ্ছু হয়নি।' বলে ওকে একরকম হাত ধরে টেনে খাটের দিকে সরিয়ে নিয়ে এল ব্রততী, তারপর নিজে সাবধানে মেঝেতে বসে দেখার চেষ্টা করল পড়ে থাকা কাচের টুকরোগুলো। যতগুলো বড়ো কাচের টুকরো চোখে পড়ে চটপট তুলে নিল সাবধানে। 'দেখ কে, তু র‍্যাহে নে দে... লেট মি কল আ ফেসিলিটি হেল্প।' বলে প্রাজক্তাও উঠে পড়ল। ব্রততী হাতের ইশারায় ওকে বসতে বলে এদিক ওদিক থেক...

ভালো থেকো নিশীথ অবশেষ —পর্ব ১২ : জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়

Image
ভালো থেকো নিশীথ অবশেষ: পর্ব ১২ - কী ব্যাপার, ফোন তুলছিলে না কেন? - আরে চোখ লেগে গেছিল... বুঝতে পারিনি। - চোখ লেগে গেছিল মানে? তোমেক কি এমনি এমনি পাঠালাম ওখানে? - - যাক গে! এখন কী সিন বলো। - খুব একটা ভালো মনে হচ্ছে না। - মানে? - মানে, একটু আগে কথা কাটাকাটি হচ্ছিল... একটা মেয়ে একা বেরিয়ে যাচ্ছিল নার্সিং হোম থেকে। - কে বেরিয়ে যেতে চাইছিল? কী বলছ ঠিক করে বলো! - আরে অন্য মেয়েটা, রোগা মত যেটা। - যে অজ্ঞান হয়ে গেছিল তার কী অবস্থা? - বুঝতে পারছি না ঠিক, এখনো তো ভেতরেই আছে। - মানে? তুমি ভেতরে থাকছ না? - গেছিলাম তো বার দুয়েক, তোমাকে তো জানালাম তখন। - তাহলে? থাকতে দিচ্ছে না নাকি? - না... ডাক্তারই বেশি লোক ঘরে থাকতে দিচ্ছে না। - ঘরের ভেতর থাকতে হবে না, নার্সিংহোমের ভেতরে থাকো। চোখে চোখে রাখো... এত করে বলে দিলাম, এত বার বুঝিয়ে দিলাম... কী যে করছ গিয়ে! এর চেয়ে আমি নিজে গেলেই ভালো হত। ধোর! - আমি যাচ্ছি এখন একবার। জানাচ্ছি তোমাকে। - দয়া করে ওদের সামনে ফোন করো না। - আচ্ছা - আর শোনো... - কী? - কতটা সিরিয়াস কেস জানিও। অন্য গেস্টরা আছে। চাপ হয়ে যাবে সকালে ব্যাপারটা অন্য দিকে গেলে। - ঘাপলা তো ...