Posts

Showing posts from December, 2022

ভালো থেকো নিশীথ অবশেষ —পর্ব ৭: জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়

Image
ভালো থেকো নিশীথ অবশেষ —পর্ব ৭:   হাসপাতাল অথবা মাল্টিস্পেশ্যালিটি ক্লিনিকের অস্বস্তিকর চেয়ারগুলোতে বসে বসে ঠাঁয় অপেক্ষা করে যাওয়া... অন্য কারো দেরি করে যাওয়া, দায়িত্বজ্ঞানহীনতা-- এই সব কিছু সহ্য করতে থাকা... সময় ছাড়াও আর কী কী মূল্যহীন হয়ে গেছে, মূল্যহীন হওয়ার তালিকায় চলে যাচ্ছে দ্রুত-- এইসব ভাবতে ভাবতে আবার সচেতন অপেক্ষার উদ্বেগে ফিরে আসা। এই অভিজ্ঞতা আর এইসবের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার ব্যাপারটাকেই ঘৃণা করে কৃষাণু।  চিকিৎসা ব্যাপারটাই যে কত বড়ো বিরম্বনা হয়ে গেছে মানুষের কাছে, তা হাতেকলমে বুঝে নেওয়া যায় এভাবে নাকাল হতে হতে। চুপচাপ হজম করে যেতে হয়, কাজটা উদ্ধার করতে হবে। লেকচার অনেকেই দেবে, কিন্তু এগিয়ে এসে কাজটা করে দেবে না। ছোটোবেলায় একরকম দেখেছে, এখন আরো বেশি করে দেখছে। বাবাকে নিয়ে কম ছুটোছুটি করতে হয়নি। মা-কে নিয়েও বছরে দু-তিনবার যাওয়া-আসা লেগে থাকে। অন্য কত জন আরো খারাপ পরিস্থিতির মধ্যে আছে, তাও তারা ভেঙে পড়ছে না... ফ্রাস্ট্রেটেড হয়ে নিজের মানসিক শান্তি নষ্ট করছে না-- এটাই একমাত্র অপ্টিমিস্টিক থাকার মন্ত্র এখন। যদিও কেউ রিয়েলিস্টিক হয়, তার পক্ষে কোনো মতেই এসবের মধ্যে যুঝতে যুঝ

শিরোনামহীন চারটি কবিতা: অণুষ্কা আচার্য্য

Image
শিরোনামহীন চারটি কবিতা  এক এক অপার্থিব ঔজ্জ্বল্যের নীচে বসে আছি, আলোতে ভেসে যাচ্ছে আমার হৃদয়; নাকি পুনরুত্থিত বাসনার তোড়ে? দুই এই মাত্র কাটা খেলো একটা ঘুড়ি। আসলে তো ঘুড়ি নয়,আমার যাবতীয় প্রত্যাশা। এখন তাদের আর খুঁজে পাওয়া যাবে না আলাদা করে কোথাও, এক্ষুনি মিশে গেল জীবনের সাথে তিন জীবন বয়ে নিয়ে চলে জীবনকে, হৃদয় বয়ে নিয়ে চলে আপনাকে আর আমি বয়ে নিয়ে চলি পাপবোধ। আমার এইটুকু আছে। চার এসবই আপনাকে দেবো। মৃত্যুচেতনা আমায় সংযমী করে, আমি দীর্ঘকাল বসে থাকতে পারিনা। আপনি আমায় স্থবিরতা দেবেন?  © অণুষ্কা আচার্য্য অঙ্কন:  শাশ্বত বন্দ্যোপাধ্যায় 

অয়ন সিকদারের গুচ্ছ কবিতা

Image
মণিহারা শিকলে নিজের ঠোঁট; আগুনে সাতটি পাক জ্বলে দালানে ধানের খই। আঁচলে মায়ের মত খাঁটি গর্ভে বন্ধ্যা হওয়া একফোঁটা কবিতা আমার, যদি সে কাঁদেও, যেন জলের শূন্য হয়ে উঠি… উঠোনে পুড়ছে মুখ। শাড়িতে পাড়ের রঙ গলে যেভাবে জ্বরের তাপ, ওর কোলে ভিজে ফেলে ঠাঁই যেন সে একটিবার আমাকে ফিরিয়ে দিতে পারে সিঁথিতে আবির রেখে ধূপগন্ধে ভাঙন শোনাই সকালে ধ্রুপদ হওয়া প্রতিটা লক্ষ্মীর পাঁচালি আহারে বাতাসাভোগ, পায়েসে স্পর্শ করা পাখি শাঁখাতে সুরের তালে যে-কটা পালক ছিঁড়ে আসে তোমাকে সন্ধে ভেবে যেন 'অনামিকা' বলে ডাকি দু'হাতে বধূর ধুলো; প্রসাদে প্রেমের রঙ লাগে আঙুলে কান্না নেই, হৃদয়ও মোমের মত পোড়ে জানালা বাবার মাটি, ঘৃণাতে লাঙল মিশিয়ে তোমাকে খুঁড়লে আরো বাংলা ভাষার ছাই ওড়ে … ২ প্রাক্তন মৃত্যুমুখ ছেড়ে উঠে আসে আনুষঙ্গিক অব্যয়… দিতে দিতে নিজেকে ক্ষিপ্ত করেছি! অথচ অপমানস্পৃহা  আমাকে প্রেত ভেবে ছুঁড়ে দেয়— এত অত্যাচার! তুমি চাইছ আরেকটু হোক এ পাশা সৈন্যজয়ী। কেন প্রশ্ন করলে না? রানিরা বিষের স্মারক  অথচ স্বাভাবিক। বুকনি ছিতড়ে আসে হাতে আর পায়ে উৎসর্গে তুমি-নাম, যেন কেউ বোঝে না… নতুন বন্ধু এ

মুন্নী সেনের গুচ্ছ কবিতা : সম্বোধন

Image
সম্বোধন  ১ কবিতা লিখি না আর কবিতা- ইদানীং যেন বালির ঘর লিখতে চাইলেই ভেঙে পড়বে ঝুরঝুর করে তবুও  কোনো কোনো রাতে জল বাড়ে নিঃশব্দে  হঠাৎ কেউ আপনি থেকে নেমে আসে তুমিতে  আর পৃথিবী ভেঙে পড়ে ঝুরঝুর করে আধখাওয়া ভাতের থালার মত  আমাদের অসমাপ্ত কথা পড়ে থাকে- একা- তুমি সুখী আমি সুখী  আমাদের কথাবার্তা টানটান জামা গোঁজা ফুলবাবু নিচের দিকে বোতাম নেই  ঢেকে রাখি  যেমন করে কেউ কেউ  আধখাওয়া ভাতের থালা ঢেকে রাখে সযত্নে  প্রেম মাছির মত ঘুরে ঘুরে ঘুরে ঘুরে  ফিরে যায়... ২ কবিতা লিখি না আর  সোজা কথা সোজাভাবে বলার সাহস চলে যাচ্ছে  এখন শুধু হাহা হিহি আর মাঝে মাঝে ফেরার পথে মাংস কিনে ঘরে ফেরা  মাইরি বলছি, কবিতা লেখার থেকে ঢের ভালো  চোখে পোকা ঢুকে যাওয়ার মত কারো কারো সম্বোধন বিঁধে থাকে সারারাত জেগে  কথা বলতে বলতে ভাত ঠাণ্ডা হয়ে আসে  কথা বলা মানে কবিতা লেখা  যাদের কবিতাকে ডালভাতের ঝক্কি পোহাতে হয় না  আমি চাই তাদের লেখার পাশে মোমবাতির নীরবতা যেটা বলতে চাইছি, কারো কারো সম্বোধন শিউলি ফুলের থেকেও নরম সকাল পর্যন্ত গন্ধ থেকে যায় সকালের পর দুপুর  দুপুর হলে ডালভাত  দুপুর হলে কবিতা আমার মৃত জ্যেঠিমা শ

ভালো থেকো নিশীথ অবশেষ — পর্ব ৬: জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়

Image
ভালো থেকো নিশীথ অবশেষ -- ৬ পর্ব যা কিছু ঘটে, তা ব্যক্তিগত সীমানার ভেতরে হোক অথবা বৃহত্তর পরিসরে, তা বেশিরভাগটাই ঘটে অপরিকল্পিত ভাবে। অপ্রত্যাশিত ভাবে। সব সময়ে সব কিছুর ফলশ্রুতি আঘাত হয়ে নেমে আসে না। প্রভাবটা সেভাবে ধাক্কা দেয় না-- তাই এই অপ্রত্যাশিত বা অপরিকল্পিত ভাবে আগমনটা সয়ে যায়। সয় না তখনই, যখন আঘাতটা অনুভূত হয়। সরাসরি প্রভাব পরে আমাদের মনে, আমাদের জীবনে। পাশের বাড়ি, পাড়া, শহর, দেশ... একটু একটু করে সীমানাটা বাড়াতে থাকলে-- একটু বেশি এসব নিয়ে ভাবলে লজ্জা বাড়বে। অপরাধবোধও ঘিরে ধরতে পারে। কত সহজেই আমার সব রকম বিচ্যুতি, আত্মকেন্দ্রিকতা, স্বার্থপরতা, নিদারুণ নিষ্ঠুরতা-- সব কিছুকেই এড়িয়ে যেতে এবং উপেক্ষা করে যেতে পারি, কেবল মাত্র আমরা নিজেরা তার দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত নই বলে। তার শিকার নই বলে। আমরা গাছ কেটে ফেলতে দেখি, বস্তি উচ্ছেদ হয়ে যেতে দেখি, স্বাভাবিক প্রশাসনিক পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হতে দেখি, প্রাপ্য আদায়ের জন্য ভিক্ষে করতে দেখি, কুকুরের মত রাষ্ট্রের সেবকদের হাতে মার খেতে দেখি মানুষকে... দেখি তো? আমাদের সয়ে গেছে। পরিবর্তনের সঙ্গে অ্যাডপ্ট করতে করতে আমাদের শরীরের ভেতরে অনেক কিছ