প্রাচীন প্রবাদ -২ : আকাশ গঙ্গোপাধ্যায়
প্রাচীন প্রবাদ -২
১
এখনই সঙ্গম ছেড়ে উঠে যাচ্ছি
যেহেতু কবিতা
আদপে পিচ্ছিল খুব, ভুল খাতে গড়িয়ে না দিয়ে
পাতায় তুলব ভাবি
তুলে রাখব ক্ষোভের বালিশে
ব্যক্তিগত অন্ধকার বারোয়ারি মঞ্চে উঠে, পড়ে
যতখানি আলো পাব, সঙ্গম সে তৃপ্তি দেবে না
২
দুপুর উলঙ্গ ডালে ঝুলে আছে লাজুক মাদুলি
মেয়েটি পোশাক খুলতে দ্বিধা করে
কাছে ডাকি, বলি
শব্দ সমুদ্র আঁকে যদি তাতে রক্ত দেন কবি
সমুদ্র রক্তিম হয়, বীর্য হয় নীলাভ বাদামি
তোমাকে শেখাতে পারি
এসমস্ত জাদুবিদ্যা, ছল
শর্ত? কেবলই জেনো, দুজনের পদ্যজাত ঢেউ
তোমাকে মাতৃত্ব দেব, অমরত্ব কেড়ে নেব আমি
৩
মাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে
হাফ মাত্রা, অথচ নাহলে লেখাতে তেমন কোনও
যৌনতা থাকবে না যাকে
কল্পনায় তুলে এনে ছেলেটি স্নানের ঘরে আজ
জানলা বন্ধ রেখে জল ঢালবে শুকনো নালিতে
মেয়েটি জানতে পেরে
প্রেমিকের গোপন চিঠিতে
আয়নায় উজ্জ্বল হবে
মায়ের স্নেহের ডাকে দেরি হবে উত্তর দিতে
৪
যেহেতু সঙ্গম থেকে উঠে এসে তাকেই লিখেছি
যুক্তি সাজালে আমি অপরাধী
কেননা বাজারে, কবিতা ছেড়েছি ভেবে
নিজেদের শয্যাদৃশ্য লিখে
পাঠককে দিয়েছি, তাতে ঘটা করে প্রথম পাতায়
নিজের নামের পাশে দিনক্ষণ জানিয়ে দিয়েছি
মেয়েটি লাজুক তাই আয়নায় নিজেকে গুছিয়ে
আমার অক্ষমতা
ভুলে গিয়ে কবিতা ভেবেছে
৫
অন্ধকারে শুতে যাওয়া, ভোরবেলা শক্ত হওয়া পেশি
আমাকে বিশ্বাস দেয়
আরও কিছু সাহসী পদ্যের
অথচ ভোরের স্বপ্ন সত্যি হলে অযথা বিপদ
সেক্ষেত্রে শহর জুড়ে গোটা দশ সন্তান আমারই
এ-ওকে চেনে না তাই বেঁচে যায় খরচের খাতা
মেয়েটি পোশাক তোলে, ভোর হয়, অন্ধকার ঢাকে
অতৃপ্ত সঙ্গম থেকে জিজ্ঞাসা উঠে আসে,
আমি যাকে নগ্ন দেখি; পাঠকও কি দেখতে পায় তাকে?
© আকাশ গঙ্গোপাধ্যায়
ছবি : শাশ্বত বন্দ্যোপাধ্যায়
Comments
Post a Comment