অর্ঘ্য দীপের গুচ্ছ কবিতা
অসময়ের বৃষ্টি
অসময়ের বৃষ্টিতে কার যেন কান্না মিশে থাকে৷ শীতরাত্রির ভিজে বাতাসে লেগে থাকে কী যেন একটা দুঃখ৷ এমন হাওয়ায় অসুখী কোনও প্রেত ঘুরে ঘুরে বেড়ায় আর অদ্ভুত সুরে গান গায়। প্রথমবার মন ভেঙেছে যে কিশোরীর, সেই গান শুনবে বলে সে বারান্দায় এসে দাঁড়িয়ে থাকে একা৷ তার যে স্বপ্নগুলো কখনও সত্যি হবে না, নামহীন ফুল হয়ে ঝরে যায় প্রাচীন একটি বৃক্ষ থেকে৷ অসময়ের বৃষ্টিতে মিশে থাকে সেই ফুলের সুবাস৷
মায়াকথন
দুঃখ-কষ্ট না থাকলে, কান্না না থাকলে, বুকের মধ্যিখানে বেশ খানিকটা শূন্যস্থান না থাকলে কি কবিতা লেখা যায়? যায় না৷ এক একদিন জানলার ধারে এসে বসে থাকি দীর্ঘসময়৷ ফোঁটা ফোঁটা বৃষ্টি পড়া দেখি৷ অনতিদূরে কয়েকটা গাছের সবুজ পাতা দমকা বাতাসে দুলতে থাকে৷ ভারী মনকেমন করা একটা সুর বেজে ওঠে ঘরের পুরোনো রেডিয়োতে৷ আমার রিটায়ার্ড বাবা শোনে সেই গান৷ অলস সময় বয়ে চলে তিরতির জলের নদীর মতো৷ অনেক করে চাওয়ার পরেও যে এলো না, সেই মেয়েটিকে সুদূর কোনও নক্ষত্রের ঠিকানা দিই৷ নিজেকে দিই মায়াজড়ানো এইসব শব্দের আড়াল আর এক জীবনের অনন্ত অপেক্ষা৷
ইচ্ছে
হঠাৎ হঠাৎ ইচ্ছে হলে তোমার কথা ভাবি
কোথায় যেন লুকিয়ে আছে অলীক মৃগনাভি
সেই সুবাসে বৃষ্টি আসে জানলা খোলা ঘরে
ইতস্তত কান্না আমার ফুলের মতো ঝরে
অতীতগামী পথটি হারায় অনেক দূরে দূরে
অনন্ত দিন অনন্ত রাত দিকশূন্যপুরে
মায়ার পালক ভাসতে থাকে ছায়ার আশেপাশে
এক জীবনের দুঃখলেখা গহিন পরবাসে
ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়ে দখিন হাওয়া ছুঁলে
হয়তো তাকে নাম ধরে কেউ ডাকলে মনের ভুলে
ধ্বংসস্তূপে নতুন রূপে ফিরবে সুসময়
তোমার কথা ভাবতে আমার ইচ্ছে যদি হয়...
©অর্ঘ্য দীপ
অঙ্কন: শাশ্বত বন্দ্যোপাধ্যায়
ভারি সুন্দর।
ReplyDelete