অগ্নিহোত্রী গুপ্তের গুচ্ছ কবিতা
১.
এই ঘর অগোছালো বহুদিন জানো,
তবু কেন আসোনি আগে এমন অভিমানও নেই।
কেবল বিছানো আছে, কুয়াশা যেমন ভোরের,
সামান্য আতিথ্য আর অপেক্ষা রয়ে যায় যদি,
যা সজ্ঞানে চাইনি ভুলে,
বয়ে নিয়ে যায় অমোঘ ঘোরে নদীর ছলে।
৩.
সব সাধ ফেলে চলে যাব,
সমস্ত চাওয়া তছনছ করে যাব নিজেই,
তার আগে শুধু দেখে যেতে চাই,
যাওয়ার পথের দিকে আনত দীঠি, ভিজে।
----------------------------------------
যে কবিতা আমি কখনো লিখিনি
তারা নষ্ট ভ্রূণের মতো এসে দাঁড়ায়।
ঘুমে এবং আচ্ছন্নতায় আরও কিছু বেলা যায়।
ঘরে খেলে ছায়া, বিষাদ
আমি তার কাছ ঘেঁষে বসি।
জন্মমুহূর্তে সরে আসি ফের।
আজীবন বিষাদ থেকে মুক্তি দেব বলেই
তোমায় ধারণ করিনি আমি।
----------------------------------------
তোমার জীবনে আমি জোর করে ঢুকে পড়ে
বোকা হয়ে যাই।
যে জীবন চলে গেছে,
তার মতো নরম কিছু গন্ধ
আমায় ঘুমের কাছে নিয়ে চলে।
দেখি
যারা যত সহজ ভালোবাসতে জানে
তারা জলের কাছাকাছি গিয়ে বসে।
----------------------------------------
হে গ্রীষ্ম বিকেলের হাওয়া,
আমার ঘরময় ঝুলিয়ে দিয়েছ আত্মহনন প্রবনতা।
এ হাওয়ায় যুগল অকারণ হেসে ওঠে,
যেন এই যে জীবন আমি পেলাম,
তা আমায় বেঁচে নিতে হবে,
যে রোগ নিরাময়হীন, মেনে নিতে হবে তা।
হে গ্রীষ্ম বিকেলের হাওয়া,
আমায় দুলিয়ে নিয়ে চলো,
আমায় উড়িয়ে নিয়ে চলো,
ওরা কারা অকারণ হেসে ওঠে?
----------------------------------------
তোমার কাছে ফিরছি,
এই খবরটা তোমার চেয়ে বেশি নিজেকে দিই।
তোমার কাছে ফিরছি,
তা তোমার চেয়ে ঢের বেশি বোধহয় আমার জানা প্রয়োজন।
তোমার কাছে ফিরছি,
এ-কথা জেনে কিছু না তৈরি হওয়া সম্পর্কের কথা মনে পড়ে,
যারা শীর্ণ একটা নদীর মতো আমার পাশে বয়ে যাবে আজীবন,
আমায় অপরাধবোধ থেকে মুক্তি দেবে না।
তবুও,
তোমার কাছেই ফিরছি ,
কারণ,
দীর্ঘ কবিতার মতো,
তুমি আমার স্নায়ু শান্ত করো।
© অগ্নিহোত্রী গুপ্ত
অঙ্কন: শাশ্বত বন্দ্যোপাধ্যায়
বিশেষ সহযোগিতা: ঋতুপর্ণা খাটুয়া
Comments
Post a Comment