অর্ঘ্যকমল পাত্রের গুচ্ছ কবিতা
ক.
কীভাবে যে তোমাদের বোঝাই, চঞ্চল দাস, আসলে ভাস্কো দ্য গামা। তাঁরই পুনর্জন্ম এই চঞ্চল। এমনি এমনি তো আর সে এখানে ওখানে ঘুরে বেড়ায় না!
সেই যে সেইবার, আমাকে আর দাদাকে ও চকচকে গোসাপ দেখিয়েছিল, সে তো কম কথা নয়! গোসাপের গায়ে পড়া নরম রোদের অন্ত্যমিল দেখে, তখন, সে বয়সেই বুঝে গিয়েছিলাম— বিষণ্ণ মানুষ কেন বোবা হয়ে যায়...
খ.
তারপর একবার সেই যে সর্ট বাউন্ডারি খেলায় পাপাইয়ের একটা বলে পুকুরে ছয় মেরে আউট হয়ে গেলাম, সে কথা ভাবলে এখনও কেমন যেন একটা হয়!
আউট হওয়ার মনখারাপ নিয়ে যেই না আমরা সবাই আমাদের একমাত্র বলটিকে খুঁজে আনতে গেলাম, তখনই বামুন পুকুরপাড়ে প্রথম দেখলাম— সোনা ব্যাঙ কেমন ঝাঁপ মারে পুকুরে। দেখলাম অযাচিত কিছু হেরে যাওয়ার মধ্যেও ঘাপটি মেরে থাকা আনন্দের লাফ…
গ.
এখন তেমন কিছুই হচ্ছে না...শুধু বিকেল নামছে...মাঠ থেকে ফিরে আসছে সব একে-একে...একটা বটগাছ মাঝেমধ্যেই একটা একটা পাতা খসিয়ে ফেলে দিচ্ছে গয়লাপুকুরে...জানান দিচ্ছে জলের জীবন...খুবই ধীরে ধীরে একটা খোলসের ভিতর ঢুকে যাচ্ছে গোটা গ্রাম...
পাশেই দিল্লিরোডের ধারে হাঁটতে যাচ্ছে, ঘুরতে বেরোচ্ছে শান্ত গ্রামবাসীরা। লরিদের থেকে শিখে নিচ্ছে গতির সম্ভ্রম!
ঘ.
অতিরিক্ত মদ খেয়ে যখন একজন বিপ্লবী হয়ে ওঠেন বাচ্চুমামা, তখন বাচ্চু-মাতাল হাবার সেলুনে যায়। রোহিত, বাইচুং, আদিত্যরা সেখানে থাকে। আরও যারা যারা সেখানে চুল কাটতে আসে, সকলেই শোনে এক চালচুলোহীন মাতালের অসংলগ্ন কথাবার্তা। কিন্তু কেউই উঠে চলে যায় না
ওই চালচুলোহীন মাতাল বাচ্চুমামাই কিন্তু একদিন আমাকে একটা সবুজ টি-শার্ট কিনে দেবে বলেছিল…
© অর্ঘ্যকমল পাত্র
অঙ্কন : শাশ্বত বন্দ্যোপাধ্যায়
প্রতিটি কবিতাই বেশ ছুঁয়ে যায়--তার দূরপ্রসারী ব্যঞ্জনায়।
ReplyDelete