Posts

Showing posts from October, 2022

সৌমিত ভট্টাচার্য্যের গুচ্ছ কবিতা : অসাংসারিক

Image
অসাংসারিক এক এখানে যৌনতা নেই।  দু'খানি পুরনো বাড়ির মতো নিস্পন্দ দু'টি মানুষ  দাঁড়িয়ে আছে পাশাপাশি, বহুদিন  মাঝে গলিপথ... নির্জনতা সেখানে আরও মন্দ্র হয়ে ওঠে  ঘড়ির আয়ু বাড়লে দেখতে পাই– সহজ আতিথ্যে যে সম্পর্কের গাছ বেড়ে উঠেছে আমাদের মাঝে;  একদিন তার ভালোবাসার ছাপোষা ছায়াটুকু  নেমে আসে দু'জনের ছাদে,                                    দু'জনের মাথায়  দুই বিধবার থানের মতো শ্বেতকায়, রাস্তাটির একপাশে  পড়ে আছে আমাদের সদ্যছিন্ন সম্পর্কের দেহ;  নিরস্ত্র, নিথর  আয়ুর জখম থেকে  ভেসে আসে রক্তাভ ঢেউয়ের বানান– অন্যপৃথিবী যাকে, দিয়ে গেছে আলতার নাম  যার ওপর দিয়েই মৃদুপায়ে হেঁটে এলে তুমি, হেঁটে এলে রাস্তাতে পায়ের ছাপ রেখে, আর  অদূরে কোথাও– নতুন বউয়ের সাজে  তোমাকে বরণ করে নিচ্ছে তোমার ভবিষ্যৎ তিন শ্রেষ্ঠতম ভাস্করের দক্ষতায়, তোমার আদলে  পাথর ভেঙে ভেঙে গড়েছি মূর্তিটি।  কাল কেউ এই স্মৃতি নিয়ে যাবে দূরান্তে, সভ্যতায়  কারো কাছে পাবে দেবীরূপ...  শুধু আমি জানি, পাথরের বুকে ও তোমাকে  কতখানি আঘাত আমি দিয়েছি, দু'হাত–  সযত্নে রেখেছে তার ক্ষতসমূহ,  এবং সাদা-কালো চ

সৌমাল্য গরাইয়ের গুচ্ছ কবিতা

Image
জাতিস্মর  পৃথিবীর প্রাচীন লিপিরা  কোনও এক গুহার দেয়ালে, এঁকেছিল জন্মদাগ  মাটির অনেক নীচে তার  পড়েছিল কালো কালো ছোপ  আদিম ইঙ্গিত পেয়ে উন্মীলন কালে  হেলে  পড়া চতুর্থীর চাঁদ হেলে সাপ হয়ে নেমেছিল জলের ভিতর স্বরযন্ত্র হতে যেসব ধ্বনিরা উৎসারিত  স্তব্ধ ছিল তারা একদিন, আকাশের কান্নার মতন ফুটে থাকা নক্ষত্রেরা যে আলোর  চোখ মেলে দিল অন্ধকারে  সুড়ঙ্গ নির্মিত সেই পথে, দিকে দিকে যত দেখি নদী, মাঠ,ছায়া চরাচর বন, পাখি, পড়ে থাকা ছই মনে হয় আমি যেন ইহাদের জাতিস্মর হই.. গর্ভিনী জলের অতলে থাকে শাপলা রঙের মেয়েটি—যেন কালো রঙের একটা ঘরে, অন্ধকারের সাথে তার বসবাস। অন্ধকার চিরকাল বড় একা—  আলো নেই কোনওদিন। দীঘির ভিতর নাগকন্যা ফুল তুলে আনতে গিয়েছিল মেয়ে। রক্তজবা পায়ে, রোদ্দুরের আলতা মেখে ঘাটে পা দিতেই, অপূর্ব একটা দুয়ার খুলে গেল।  জগতের বিশাল দুয়ার— যেন একটা পদ্মযোনি  মা হতে পেল। গর্ভ দিল মেয়েটি। চিরকালীন যে অন্ধকার সে পেল নতুন মা,  ঠিক তখনি একটা প্রজাপতি উড়ে বসলো লাজুক  নোলকে... দীঘির জল সেই প্রথম প্রসব বেদনা অনুভব করল। শালুক ফুটল চারদিকে। ভোর এল, সন্তানের মতো... রমণীয়    স্নেহকলসের পাশে রেখেছি আনত মু

ভালো থেকো নিশীথ অবশেষ — পর্ব ৪ : জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়

Image
প্রশ্নটা শুনে অপ্রতিম কিছুক্ষণ চুপ করে রইল। ভাবার চেষ্টা করল। টায়রা কিছুটা কাছে এগিয়ে এসে গলা নামিয়ে বলল, ‘অত ভেবে বলবেন না, ভেবে বললে লোকে বানিয়ে উত্তর দেয়!’ নিশাচর প্রাণী শুনে প্রথমেই অপ্রতিমের চোখের সামনে ভেসে উঠল একটা নেকড়ের মুখ। একলা, রাতের অন্ধকারে বিচরণ করা একটা নেকড়ে। কিন্তু নেকড়ে কি বিশেষ ভাবে নিশাচর?– নিশ্চিত হতে পারল না। তারপরই মনে এলো বাদুর আর পেঁচার কথা। সঙ্গে সঙ্গে সেই পেঁচাটা আবার একবার ডেকে উঠল– শিশুর কান্নার মত ককিয়ে ওঠা শব্দ।        ওরা এতক্ষণে হাঁটতে হাঁটতে পুকুরের অন্যপ্রান্তে, যেখান থেকে ওদের রিসর্টটা দেখা যায়। এককালের জমিদার-বাড়ি…এখন পুনর্নির্মিত বিলাসমহল। অপ্রতিম কিছুক্ষণ চেয়ে রইল সেইদিকে। জমিদার-বাড়ির কাঠের খরখরি দেওয়া পাল্লাগুলো একই রকম রাখা আছে। শুধু কাচের আর একটা করে পাল্লা করা, ঘরগুলো বাতানুকূল রাখার জন্য। এখনও কয়েকটা জানলা দিয়ে আলো আসছে, কোথাও হলদেটে, কোথাও মাখন-রঙা আলো। জমিদারবাড়ি, তার জানলা, জানলা থেকে বেরিয়ে আসে নরম মাখন-রঙা আলো– এদের প্রতিবিম্ব টলটল করেছে পুকুরের জলে, যেখানে পানা সরে গেছে। ‘কী সুন্দর ফ্রেম… তাই না?’ টায়রার কথায় আবার একটা স্