অর্কপ্রভ ভট্টাচার্যের দুটি কবিতা
১৪ই মার্চ
(১)
যাবতীয় তুচ্ছতাচ্ছিল্য একটা ১৪ই মার্চের বিনিময়ে ভুলে যেতে চাই
কোনো এক ১৪ই মার্চে যদি কবিতা লেখা ভুলে যাই যেমন ভুলে গেছি এই ১৪ই মার্চে চমৎকার বকবকম করে যাওয়ার রীতি;
সেক্ষেত্রে নিশ্চয়ই আবার কবিতার ক,খ দিয়ে শুরু করব কিনা বা সেটুকুর সম্ভবনা কতটা
বরং তার চেয়েও হয়তো সেই ১৪ই মার্চে হয়ে উঠব সুদক্ষ চাষী।
মাননীয় শ্রোতাগণ,
যদি শুধুমাত্র ১৪ ই মার্চগুলোকে যোগ ক'রে ফেলতে পারেন
আপনারা পেতে পারেন আকর্ষণীয় উপহার
(২)
কিন্তু কোনো এক দুর্বোধ্য কারণে ১৪ ই মার্চ এলে ক্রমশ রোগা হতে থাকি। একটা ১৪ই মার্চ থেকে অন্য আরেক ১৪ই মার্চের দূরত্ব শুধুমাত্র ৩৬৫ দিনের নয়, কেননা আরেকটা ১৪ ই মার্চ পেরোতে পাঁচ লক্ষ সত্তর হাজার টাকার খরচসাপেক্ষ। তার মধ্যে এসে গেছে ব্যয়বহুল জুলাই , অক্টোবর ও ডিসেম্বর মাস। ১৩ ই মার্চের রাত্রি আর ১৪ ই মার্চের রাত্রি প্রায় একই, একটা কবিতা লেখার ব্যবধান মাত্র।
(৩)
এমনই মেঘভাঙা দিনে নয় বছর বয়সে কী করেছি, সতেরো-আঠারো বয়সে কী ভেবেছি - জানতে ইচ্ছে করে। আরও জানতে চাই, চল্লিশ বছরে বসে কী ভাবব। ভাবব এই দিনগুলো সোনার থেকেও সস্তা আর জলের থেকেও দামী ছিল। আজ চোদ্দ-তিন-দু’হাজার বাইশে বসে ভাবছি, জীবনের প্রতি প্রেম কি তখনও থাকবে? অহনা কি থাকবে কাছে? সোহিনীদি’র কথা কি ভুলে যাব? কিংবা গান পাগল সৃঞ্জয়কে কতদিন অন্তর মনে পড়বে। সত্তর-আশি হাজারীদের সাথে আলোচনা করছি, এখন বাড়িবদল করা কি উচিত হবে?
দু'কাপ স্বপ্ন
সকালবেলায় ‘শোনো না... জানো তো’ এই প্রকার কিছু ব'লে
মা-বাবা চায়ের কাপ হাতে প্রতিদিনের সংসার শুরু করে।
কীভাবে সংসার চলবে
এই নিয়ে আলোচনা চলতে চলতে
বেলা বাড়ে।
আমরা তিনজন তিনদিকে ছিটকে যাই---
সন্ধেতে জড়ো হ'লে কেউ কারোর সঙ্গে কথা বলি না,
লজ্জায় মুখ চাওয়া-চাওয়ি নেই,
আমি কবিতার ডাইরি খুলে বসি,
বাবা এসে ফ্যানের রেগুলেটর ঘোরায়
এবং মা সকালের এঁটো কাপ ধুতে যায়
যাতে দু’কাপ চা হাতে সকাল শুরু করতে পারে...
© অর্কপ্রভ ভট্টাচার্য
পোস্টার : ত্রিবিন্দু
Comments
Post a Comment