সব্যসাচী মজুমদারের গুচ্ছ কবিতা : মৃত্যু ভয়ের পর থেকে লেখা

মৃত্যু ভয়ের পর থেকে লেখা


(অ)

দূরে দিগন্ত কমেছে...
এইসব মৃত্যু ভয় পাই

এসময়ের কোন‌ও বল্লরী নেই
পুড়ে যায় দরদ অবধি
পুড়ে যাচ্ছে কুকুরের থাবা...

তুমিও খেয়েছো তাকে
           এখানে এসেই


(আ)

কালো মাথা হাঁসেরাও জানে
বনতল কবীর অবধি

ছেলে বড় হয়
চুল আঁচড়ে আসে বিকেল বেলায়

তবে তুমি ফসলের মাটি---একথা জানে না
গত গ্রীষ্মেও সে ছিল সারস মূলতঃ 


(ই)

দিগন্ত ও দিগন্ত হে আমি তোমার ড্রপার
নিয়ে যেতে যেতে মুখে দিয়েছি আমূল
ভারতীয় স্বাদের মতন এ শহরে
                                  বিহাগ আমাকে টানে
জারুল গাছের দিকে

অক্ষরবৃত্তে দেখি সারাটা বৃক্ষের গা 
    ভরে গেছে শনিবারের আলোয়

আমি শুধু পালক পেরিয়ে যাই

(ঈ)

ময়ুরের অনিত্যের সুখে যে ক'টি জঙ্গল
তাদের সিনেমা হয়

প্রবাস‌ও রয়েছে কিছুটা

সে তো পোশাকের মতো 
মিশে যায়...

আশ্চর্য মানুষ একদিন মাছ হয়ে যাবে


(উ)

তোমার পেটের মধ্যে একটা কাঠ খোদাই
                                 চিংড়ি ঢুকিয়ে রাখবো
তার সারা গায়ে সূচ দিয়ে সংকেতে লিখে দেবো
                               যে কটি খাদ্যের রেসিপি 
জানি

তুমি ওগো,এই টুকুই তো
        নিয়ে বেঁচে থাকো
                  পরবর্তী সনেট অবধি 

(ঊ)
সিলুট আপাতত কিছুটা ভেবেছে
বাকিটা মদ কিনতে গিয়ে ভাববো

আসার সময় সস্তা খেজুর কিনে তাকাবো
বাদামের দোকানের টাকা ফেরত দিল না। 
         লটারির লোক।

ঝামেলার ফাঁকে
একটি গলি
খায়

মেয়েদের মতো হাওয়া

(ঋ)

টপিংস হিসেবে ভেড়ার চর্বি
অল্প ভেজেই নামিয়ে দিলেই 
ফ্রেমে জীবন্ত বাবল নামবে

বাবলের ভেতরটুকু
এতটাই পরিস্কার
যে ওদিকে
চা বাগান কামিনেরা পাতা ছিঁড়ছে

তুমি দেখতে পাচ্ছো...

(এ)

একটা মেঠো রাস্তার ভেতর থেকে
নিরন্তর মেঠো রাস্তা বেরিয়ে আসছে

তার কোন‌ও অনির্বচনীয় গুণরাশি নেই
অথচ তাকে না লিখেও থাকতে পারছো না

তোমার জরুরি কাপড়গুলো সারারাত বারান্দায় শুকিয়েছে
পাঁচিলহীন বাড়ির ওপর

(ঐ)

একটা মেঠো রাস্তার ভেতর থেকে
নিরন্তর মেঠো রাস্তা বেরিয়ে আসছে

তার কোন‌ও অনির্বচনীয় গুণরাশি নেই
অথচ তাকে না লিখেও থাকতে পারছো না

তোমার জরুরি কাপড়গুলো সারারাত বারান্দায় শুকিয়েছে
পাঁচিলহীন বাড়ির ওপর যতটা আস্হা তোমার
ততটাই বিস্তৃত তৃণভূমি

দিগন্তের সমস্ত কাজল পরিপূর্ণ হয়ে যায়
মুণী ও ঋষিতে...

(ও) 

অনার্যের প্রার্থনা ওগো,
একবার দাঁড়াও।শহরের প্রান্তে যে
সিনেমাটি দেখা হচ্ছে
তার সঙ্গে উত্তরের হাওয়ার সম্পর্ক কী
এ নির্নয়ের আগে তুমি যদি চলে যাও তবে
বেদব্যাখ্যার ভিন্নার্থ হবে

নচেৎ একদল সৈন্যের মধ্যে ঢুকে পড়তে পারে প্রাগৈতিহাস।অরণ্যদেবের স্টেগোরসোরাসের মতো
সেও একটা ডাক নাম নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে
সৈন্য দলের ওপরে

ইহার পর এক বৃহন্নলা কোকিল খেপিয়েছিল

© সব্যসাচী মজুমদার
অংকন : ঋতুপর্ণা খাটুয়া

Comments

  1. প্রতিটাই অসাধারণ বিশেষ করে 'ঊ' আর 'ই'।

    ReplyDelete
    Replies
    1. ধন্যবাদ। সঙ্গে থাকুন

      Delete

Post a Comment

Popular posts from this blog

অনিন্দ্য সরকারের গুচ্ছ কবিতা : গান ছুঁয়ে ছুঁয়ে

অয়ন হালদারের পাঁচটি কবিতা

মুন্নী সেনের গুচ্ছ কবিতা : সম্বোধন