Posts

Showing posts from July, 2022

সুরজিৎ বেরার দুটি কবিতা

Image
দাদু ও পথ ১ দাদু হাঁটে... ঘরের মাটির দেওয়াল ধরে দেওয়ালে আঁকে রাস্তা জোঁকের কষাটে গমন পথ ২. সকালে পুজোর স্বর দাদু ফুল তোলে তুলসী দুর্বা জবা টগর নিয়ম করে হাওয়ার শ্লথ তরুশ্রেণির মধ্যবর্তী পথ ৩. দাদুর একটা লাঠি আছে দাদু হাঁটে, লাঠি হাঁটে  মাতালের মত এদিক ওদিক শব্দ করে ঠক ঠক রাস্তা যায় এঁকেবেঁকে... লাঠিটা স্থির দাঁড়িয়ে নিঃশব্দে - দাদু ঘুমিয়ে - চিহ্নিত সরল পথ _____________________________ সম্পর্ক  তুমি গেলে : বৃষ্টি এল চাষী করে কৃষিকাজ মৃতপ্রায় গাছের চেতনা                        উল্লসিত প্রাণ পাখিরা বাসা বাঁধে                         রচে অম্ল গান তবু থাকে বিষন্নতা মাটির বুকে বিষাক্ত বিষের জ্বালা সোঁদা প্রেমের                                         গন্ধ শোঁকে... © সুরজিৎ বেরা অঙ্কন : ঋতুপর্ণা খাটুয়া

অরিত্র সোমের দুটি কবিতা

Image
আগামীকাল খবর হবে আপাতত শব্দের প্যাঁচ পেরিয়ে,  দু'ঠোঙা মুড়ি হাতে বসে দেখছি রাস্তা থেকে কীভাবে একটা পায়রা গড়িয়ে গড়িয়ে ধুলো মেখে নিচ্ছে একটু একটু করে পালক ছড়িয়ে পড়ছে পাশে তার ওপর পোস্টার দিকে দিকে কীভাবে ছড়িয়ে পড়বে বিপ্লবের শব্দ...  পায়রাটা শোনে, চুপচাপ ওপারে সন্তানের মুখ... আরও আলো... আয়ু পালক মাড়িয়ে মিছিলের কোরাস চলে যাচ্ছে অথচ অবাক কাণ্ড, রাত পেরলে কোনও রক্ত আমাদের                           অবাক করবে না ঠোঙা উড়ে উড়ে, জড়ো হবে নর্দমার পাশে আগামীকাল খবর হবে।  আগামীকাল, মিছিল থেকে, কেউ একজন পোশাক পাল্টে নেবেই আর শব্দের দাঁড়ার ফাঁক দিয়ে কিছু অর্থহীন পালক  ক্লান্তিহীন উড়েই যাবে আমাদের হাতে এখন আরেক প্রস্ত মুড়ির ঠোঙা যেভাবে আয়না আসে অজস্র কাণ্ড দেহে ত্রাহি ত্রাহি চলে শিশু আসে কলতলায়;— নোঙর ন্যাংটা খুলে সে কি জন্ম দ্যাখাও প্রভু! মনে হয় বাড়ি ফিরে চিরে দেখি শাপ। তোমারও ছায়া পড়ে এই অনন্ত দুপুরে, ট্রেন যায়, আসে                                        কাঁপুনি থরোথরো তুমিও ছোঁবে বলে এই ভরবেলা শব্দছক দেখি; একেকটা গলি ঘুরে কাছে এলেই চিচিংফাঁকের মন্ত্র যেন প

শাম্বর মুক্ত গদ্য : দেবী

Image
দেবী ১ ‘উন্মাদের একটা সরল গুণ থাকে পুষাণ। সে আমাকে পাথর করতে চায় না, অপেক্ষা করে, কখন আমার সর্বস্ব সবুজ থেকে একফোঁটা জল গড়িয়ে পড়বে মাটিতে।’           কথাটা বলতে গিয়ে যেন কোনো আদিম ঈশ্বর খেলে যায় সুতপার মুখে। কথিত আছে বটে, এ ঘাস জমির ওপরেই একদিন অগ্নির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিল গ্রাম্য যুবতী, তন্দ্রা। খানিক এগোলেই তার মন্দির।  ২          এক আলোকবর্ষ কে সাক্ষী করে ওরা চলেছে সেদিকেই।সুতপা আর পুষাণ। বর্ষার মেঘ ধরে আছে সন্ধ্যার আকাশে। নোনা মাটির চাতাল আর শুকনো নারকেল পাতার ছাউনির ভেতরে সত্যিই স্থাপিত একজন চকচকে ঈশ্বরী। কিন্তু এই সত্যের চাকচিক্যর নীচে যুগের পর যুগ রয়ে যায় এক একটা মিথ্যের স্তব গাথা। যেভাবে একদিন কবরের নীচে, দেহ থেকে মিথ্যে হয়ে যায় মাংসের আভরণ। আর উন্মুক্ত কঙ্কাল ক্ষয়ে উর্বর হয় মাটি। সে মাটিকেই তো আশ্রয় করে গুল্ম থেকে বৃক্ষ হয়ে ওঠা। কিশোরী থেকে যুবতী। সত্য মিথ্যার এই নীরব সমীকরণে মনুষ্য থেকে বৃক্ষ, চোখের পলক থেকে গাছের পাতা, হাতের আঙুল থেকে নতুন শাখা-প্রশাখা-কান্ডের অবাধ বিস্তার।             কিন্তু , মানবী থেকে দেবী হয়ে ওঠা, সে আরেক ব্যাপার।যুগের পর যুগ শব সাধনায় মেতে য

সীমিতা মুখোপাধ্যায়ের গুচ্ছ কবিতা

Image
সিঁড়িভাঙা অঙ্ক  -------------------- কাশতে কাশতে ভেঙে-যাওয়া গলা সিঁড়িভাঙা অঙ্কের মতো নেমে যায় পরিবাহার গাছের জাদুপল্লবে।  শিশিরে কেঁপে-ওঠা ঘাস, মর্মর মূর্তির হঠাৎ চোখ-মেলা— আমি দেখে ফেলি আবার একাদশীর আবহসঙ্গীতে।  আমার জলটুঙ্গি সেজে ওঠে খড়ের পুতুল আর অচেনা জোনাকি ফুলের মাধুর্যে। তোমার নিশ্চুপ এসে দাঁড়ায়,  একবার ছুটকারা পেলে উড়ে যাবে যে বেগানা বাতাস— ঠিক তার পাশে।  তোমাকে কেমন দেখতে, তমসাপুরুষ? কোনো এক তৃষিতবেলার কাহিনি শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে পড়ে চন্দ্রাহত ধু ধু বালুচর। আশ্চর্য-কঠিন এক ছেলেখেলা, কয়েকটি তন্দ্রাচ্যুত তারকা, ম্লান রাজহাঁসের দেহরেখা কুয়াশাস্তম্ভের ভিতর হেলায় হারায়। স্খলন-নামা ------------------ ভ্রমরদীঘি ভেসে যায় বেহুলাভেলায়— ম্লান হয়ে আসা মফস্সলের দিকে, ছায়াজালকের শিরস্ত্রাণ মাথায় পূর্ণিমার চাঁদ— তাকে অনুসরণ করে আমরা ধেয়ে যাই কবরখানার পাশে, যেখানে নিস্তারিণীতলা।  বুড়ো দর্জি আনমনে সেলাই-মেশিন চালায়,  সোনা দুটি চোখ নিয়ে কুয়াশাপুরুষ নেমে আসবে এইবার,  জোনাকিবাগান গাঢ় হয় বেকসুর অপেক্ষায়।  আমার তো কোথাও জুড়ে যাওয়ার নেই,  অঙ্গহানির ব্যথা জুড়ো

শীলা বিশ্বাসের গুচ্ছ কবিতা : মনচেরাই

Image
মনচেরাই ১ মৃতস্বর যাপন  খুলে যায় আকাশের নীরব তান তুলে কাহারবায় অযুত কলহ-সমবায় তারা খসায় দৈনন্দিন ২ মৈথুন শেষে স্বভাবসম্মত ঘুম ঝোলা স্তনে তিলের ঘরবাড়ি অমীমাংসিত পান্ডুলিপি খুঁটে খায় এপিঠ ওপিঠ সাধের পিঁপড়ে ভাগিদার  ৩ কোনও প্রসঙ্গ রাখিনি মাইল মাইল উদ্দেশ্যহীন ক্লান্তিও ছিল না আঘাতের দিক নির্দেশে হাওয়া মোরগ ঘোরে  ৪ প্রলেপ ও প্রলাপে গান বেঁধেছ দ্যুতি ও দয়ার শরীর কোমল না কড়ি কীভাবে মা ডাকবে ?  ৫ সামান্য পাথর ভেবে পায়ে পায়ে এনেছিলে এখন প্রমাণে আয়তন অকুল পাথার কীভাবে ডিঙিয়ে যাবে ? © শীলা বিশ্বাস অঙ্কন : শাশ্বত বন্দ্যোপাধ্যায় বিশেষ সহযোগিতা : ঋতুপর্ণা খাটুয়া

সব্যসাচী মজুমদারের গুচ্ছ কবিতা : মৃত্যু ভয়ের পর থেকে লেখা

Image
মৃত্যু ভয়ের পর থেকে লেখা (অ) দূরে দিগন্ত কমেছে... এইসব মৃত্যু ভয় পাই এসময়ের কোন‌ও বল্লরী নেই পুড়ে যায় দরদ অবধি পুড়ে যাচ্ছে কুকুরের থাবা... তুমিও খেয়েছো তাকে            এখানে এসেই (আ) কালো মাথা হাঁসেরাও জানে বনতল কবীর অবধি ছেলে বড় হয় চুল আঁচড়ে আসে বিকেল বেলায় তবে তুমি ফসলের মাটি---একথা জানে না গত গ্রীষ্মেও সে ছিল সারস মূলতঃ  (ই) দিগন্ত ও দিগন্ত হে আমি তোমার ড্রপার নিয়ে যেতে যেতে মুখে দিয়েছি আমূল ভারতীয় স্বাদের মতন এ শহরে                                   বিহাগ আমাকে টানে জারুল গাছের দিকে অক্ষরবৃত্তে দেখি সারাটা বৃক্ষের গা      ভরে গেছে শনিবারের আলোয় আমি শুধু পালক পেরিয়ে যাই (ঈ) ময়ুরের অনিত্যের সুখে যে ক'টি জঙ্গল তাদের সিনেমা হয় প্রবাস‌ও রয়েছে কিছুটা সে তো পোশাকের মতো  মিশে যায়... আশ্চর্য মানুষ একদিন মাছ হয়ে যাবে (উ) তোমার পেটের মধ্যে একটা কাঠ খোদাই                                  চিংড়ি ঢুকিয়ে রাখবো তার সারা গায়ে সূচ দিয়ে সংকেতে লিখে দেবো                                যে কটি খাদ্যের রেসিপি  জানি তুমি ওগো,এই টুকুই তো         নিয়ে বেঁচে থাকো